Logo

রাজনীতি    >>   সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের সঙ্গে বাঙালি নারীর সম্পর্ক নেই: ইসলামী আন্দোলন

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের সঙ্গে বাঙালি নারীর সম্পর্ক নেই: ইসলামী আন্দোলন

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের সঙ্গে বাঙালি নারীর সম্পর্ক নেই: ইসলামী আন্দোলন

Progga News Desk:

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মহিলা বিভাগের প্রধান নুরুস সাবিহা, সহপ্রধান কোহিনূর বেগম ও সমন্বয়কারী হাফেজা বুশরা বলেছেন, নারী সংস্কার কমিশন প্রধান উপদেষ্টার কাছে যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তার প্রস্তাবনা, ভাষা ও যুক্তি আমাদের হতাশ করেছে।

তারা বলেন, পশ্চিমের ধর্মবিমুখ,পরিবার বিচ্ছিন্ন ও ব্যক্তি স্বাতন্ত্রবাদের বিকৃত বিকাশের পটভূমিতে বিকশিত নারীবাদী চিন্তার পাটাতনে ও ভাষায় নারী বিষয়ক সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা এ দেশের নারীর হাজার বছরের বোধ-বিশ্বাস, চরিত্র, মেজাজ ও সংস্কৃতির সাথে সম্পূর্ণরূপে সাংঘর্ষিক। রোববার (২০ এপ্রিল) এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এসব কথা বলেন।

তারা বলেন, এই কমিশনের সদস্য নিয়োগের সময়ই প্রথম ও প্রধান ভুলটি হয়েছে। কমিশনের প্রধান করা হয়েছে নারীপক্ষের এক নেত্রীকে। নারীপক্ষ বাংলাদেশে একটি মতাদর্শিক আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত, যার সঙ্গে এদেশের নারী সমাজের বৃহৎ অংশ একমত না। কমিশনে আরও যাদের সদস্য করা হয়েছে, তারাও একই মতাদর্শের। ফলে এই কমিশন বাংলাদেশের নারীদের সাধারণ অংশের প্রতিনিধিত্ব করে না। প্রতিবেদনেও সেই একদেশদর্শি চিন্তা ও ভাবনার প্রতিফলন দেখা গেছে।

ইসলামী আন্দোলনের নারী নেত্রীরা বলেন, প্রতিবেদন তৈরিতে একাডেমিক স্বীকৃত কোন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় নাই। বৈষম্য, উন্নয়ন, নারীর অধিকার ইত্যাদি জরুরি ও প্রধান পরিভাষার কোন সংজ্ঞা দেয়া হয় নাই। অথচ সমাজবিজ্ঞানে এই ধরনের প্রতিবেদনে এর সংজ্ঞা নির্ধারণ করা অপরিহার্য। প্রতিবেদনে কোন তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার না করেই নানা সিদ্ধান্তমূলক মন্তব্য করে তার ভিত্তিতে নানা প্রস্তাব করা হয়েছে। সামগ্রিকভাবে মনে হয়েছে, এটা কোন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন না বরং নির্দিষ্ট মতাদর্শিক আন্দোলনের প্রচারপত্র তৈরি করা হয়েছে। নতুন বাংলাদেশে যখন আমূল সংস্কার ভাবনায় গোটা জাতি উন্মুখ হয়ে আছে তখন এই ধরনের নিন্মমানের প্রপাগান্ডা সংস্কার কার্যক্রমকেই বিতর্কিত করবে।

নারী নেত্রীরা বলেন, প্রতিবেদনে এক জায়গায় উপ-শিরোনাম করা হয়েছে, ‘পুরুষের ক্ষমতা ভেঙে গড়ো সমতা’। এই ধরনের ভাষা ও প্রতিপাদ্যই তাদের চিন্তা ও সমাজ বিচ্ছিন্নতা প্রমাণ করে। বাঙালি নারী কখনোই পুরুষকে প্রতিপক্ষ না বরং সহযোগী ও সহকর্মী ভেবেছে। পুরুষের সঙ্গে নারীর সম্পর্ক ক্ষমতার না বরং মায়া-মমতা ও ভালোবাসার। মায়া-মমতা ও ভালোবাসার সম্পর্কের কারণেই বাঙালি পুরুষ নারীর মর্যাদা রক্ষায় নিজের রক্ত উৎসর্গ করেছে আর বাঙালি নারী পুরুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য ঘাম ঝরিয়ে সংসার গড়েছে।কমিশনের সদস্যরা নারী-পুরুষের সম্পর্ক নির্ণয়ের মূলভিত্তি নির্ধারণে ভুল করেছে ফলে তাদের প্রতিবেদন পুরোটাই ভুল পথে পরিচালিত হয়েছে।

তারা আরও বলেন, আমাদের সমাজ হাজার বছর ধরে ধর্মকে প্রধান করেই জীবন পরিচালনা করেছে। ধর্ম তার বহুমাত্রিক ব্যবস্থাপনা দিয়ে নারী-পুরুষকে পরস্পর নির্ভর করেছে। এই বাস্তবতা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন পারিবারকি আইনে ধর্ম বাদ দেওয়ার কথা বলেছে। এই প্রস্তাব তাদের অজ্ঞতা ও ধর্মবিদ্বেষী মতোভাবের বহিঃপ্রকাশ।

ইসলামী আন্দোলনের নারী বিভাগের প্রধান নুরুস সাবিহা দাবি জানিয়ে বলেন, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনকে বাতিল করতে হবে, তাদের প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করতে হবে। বাংলাদেশের নারী সমাজের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে দেশের হাজার বছরের বোধ-বিশ্বাস, চরিত্র, মেজাজ ও সংস্কৃতির অনুকুল সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করতে হবে।